প্রদীপ মজুমদার : করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঘরবন্দি হয়ে পড়া দরিদ্র ও দিনমজুর মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সামাজিক সংগঠন ‘মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশন’।
আজ ৫ মে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের মেহেরকুল দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সংগঠনটি নিজ গ্রামে ৮০ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন সংকটের সময় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছে সামাজিক সংগঠন মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশন। আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে শ্রমজীবী মানুষের পাশে।
সংগঠনটির আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, সদস্য মো : তাজুল ইসলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত মোঃ হেলালুল ইসলাম, মোঃ মজিবুর রহমান ও কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোঃ তারেকুল ইসলাম নিজেদের অর্থায়নে তাদের পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত মরহুম মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সময়ে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ সামাজিক কর্মকাণ্ড করে আসছেন। খাদ্য উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আলু, তেল, পেঁয়াজ, সেমাই ও চিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবদুল মমিন মজুমদার, বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সফিকুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এ টি এম সামছুদ্দিন, বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম, দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ এমদাদুল হক মজুমদার, প্রধান শিক্ষক মোঃ তফাজ্জল হোসেন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক এড. জাহাঙ্গীর আলম, নিখাত মজুমদার ও স্থানীয় মেম্বার আবদুল ওহাব প্রমুখ।
এই কার্যক্রমে উপস্থিত হয়ে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবদুল মমিন মজুমদার এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ এলাকার মাটি ও মানুষের নেতা মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি, তার নির্দেশনা মেনে আমরা বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশন এর প্রশংসা করে বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে সমাজের এই মহৎ উদ্যোগে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। সমাজের সব সামর্থ্যবানের উচিত এই সময়ে দুস্থ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানো।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, করোনা মহামারী প্রকোপের কারনে কর্মহীন অসহায় মানুষ আজ বেশি বিপাকে পড়েছে। মাননীয় অর্থমন্ত্রী প্রতিনিয়ত এখানকার মানুষের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। সকল ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমরা ইউনিয়নের সকল গ্রামে অসহায় কর্মহীন হয়ে পরা মানুষের পাশে দাড়িয়েছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ তারা অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন এই ফাউন্ডেশনের সফলতা কামনা করি পাশাপাশি সংগঠনের যে কোন কাজে সহযোগিতা করবে বলে বলেন তিনি।
সংগঠনের আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম সংগঠন এবং বর্তমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, সামাজিক কর্মকাণ্ড ও অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করার চিন্তায় তাদের এই সংগঠনের জন্ম। এজন্য নিভৃতে অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা প্রাদুর্ভাবের জন্য দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং অফিস আদালত ছুটি হয়ে যাওয়ায় বিপুল জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়ায় অনেকেই খাদ্য সংকটের মতো মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। এজন্যই মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশন এইসব পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে মকবুল হোসেন ফাউন্ডেশনের অন্যতম সদস্য প্রভাষক মোঃ তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, সারা বিশ্বে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। একটি অনুরোধ দয়া করে কেউ গরিব-দুঃখী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না করে যার যা সুযোগ ও সামর্থ্য আছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার সহযোগিতাই পারে ওদের মধ্যে একটু হলেও হাসি ফুটাতে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি আমাদের এই সীমিত প্রচেষ্টা পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করবে না। তবু গরিব-দুঃখী মানুষ যাতে না খেয়ে আতঙ্কে মারা না যায়, আপাতত আমাদের এই সীমিত প্রচেষ্টা। ইনশা আল্লাহ আমরা পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত আরো সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করব।
আরো পড়ুনঃ